ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তী অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের মেজো ছেলে রওশন হোসেন বাপ্পিকে ছাড়াই আজ দাফন সম্পন্ন হবে। কারণ, তিনি আগামীকাল বুধবার (২৩ আগস্ট) আসতে পারছেন না। তাই আজই দাফনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার পরিবার।
রাজ্জাকের পরিবার সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ১০টায় নায়করাজের মরদেহ নেয়া হবে এফডিসিতে। সেখানে প্রথম জানাজা শেষে তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হবে। সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য দুপুর ১২টায় মরদেহ শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর বিকেল ৩টায় গুলশানের আজাদ মসজিদে সর্বশেষ জানাজা শেষে বনানী বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মানে সমাহিত করা হবে।
এদিকে, নায়করাজের মরদেহ দাফনে সময় পরিবর্তিত হয়েছে। রাজ্জাকের মেজো ছেলে বাপ্পি আগামীকাল বুধবার ভোরে কানাডা থেকে দেশে ফিরবেন। তিনি তার বাবাকে যে কোনো মূল্যে শেষবারের মতো দেখতে মায়ের কাছে আবদার করেছিলেন। কিন্তু তিনি আসতে না পারার কারণে সকালে আবারও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়।
উল্লেখ্য, রাজ্জাক পশ্চিমবঙ্গের (বর্তমান ভারতের) কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্বরসতী পূজা চলাকালীন মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের জন্য তার গেম টিচার রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাকে বেছে নেন নায়ক অর্থাৎ কেন্দ্রীয় চরিত্রে। শিশু-কিশোরদের নিয়ে লেখা নাটক বিদ্রোহীতে গ্রামীণ কিশোর চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়েই নায়করাজের অভিনয়ে সম্পৃক্ততা।
১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে পাড়ি জমান রাজ্জাক। প্রথমদিকে তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশনে "ঘরোয়া" নামের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হন। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে আব্দুল জব্বার খানের সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান। সালাউদ্দিন প্রোডাকশন্সের তেরো নাম্বার ফেকু ওস্তাগড় লেন চলচ্চিত্রে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করে সবার কাছে নিজ মেধার পরিচয় দেন রাজ্জাক। পরবর্তীতে কার বউ, ডাক বাবু, আখেরী স্টেশন-সহ আরও বেশ ক'টি ছবিতে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয়ও করে ফেলেন। পরে বেহুলা চলচ্চিত্রে তিনি নায়ক হিসেবে ঢালিউডে উপস্থিত হন সদর্পে। তিনি প্রায় ৩০০টি বাংলা ও উর্দু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। পরিচালনা করেছেন প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র।
১৯৯০ সাল পর্যন্ত বেশ দাপটের সাথেই ঢালিউডে সেরা নায়ক হয়ে অভিনয় করেন রাজ্জাক। এর মধ্য দিয়েই তিনি অর্জন করেন নায়করাজ খেতাব। অর্জন করেন একাধিক সম্মাননা। এছাড়াও, রাজ্জাক জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করেছেন।
গো নিউজ২৪/এবি